টানা বৃষ্টিতে সরবরাহ কম থাকায় রাজধানীর কাঁচা বাজারে সবজির চড়া দাম যাচ্ছে। এবার বেড়েছে ডিম ও পেঁয়াজের দাম। ৫০ থেকে ৫৫ টাকার পেঁয়াজ বর্তমানে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঠাটারী বাজার, কাপ্তান বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। সরেজমিন দেখা যায়, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে বেগুনের। সরবরাহ কম দেখিয়ে গত সপ্তাহের ১০০ টাকার গোল বেগুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ৭০ টাকার লম্বা বেগুন ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০০ টাকার দেশি শসা বর্তমানে ১২০, ৬০ টাকা হাইব্রিড শসা ৮০, ৬০ টাকার ঝিঙ্গা ৮০, ৫০ টাকার লাউ ৭০ থেকে ৮০, ৮০ টাকার করলা পৌছেছে ১০০ তে। এদিকে পটোল ৬০, বরবটি ৮০, চিচিঙ্গা ৬০, কাঁকরোল ৮০, ঢ্যাঁড়স ৬০, চায়না গাজর ১২০ থেকে ১৪০, দেশি গাজর ৮০, পেঁপে ৩০, টমেটো ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া কুমড়ো কেজি প্রতি ৪০, কচুরমুখী ৬০, লেবুর হালি ৩০, কচুর লতি ৮০, আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকায়। কাঁচা মরিচের দাম কিছুটা কমেছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ২০০ থেকে আড়াইশ টাকার কাঁচা মরিচ এ সপ্তাহে মিলছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায়। কাপ্তান বাজারের ইয়াকুব স্টোরের বিক্রেতা আকাশ বলেন, বৃষ্টির কারণে সব সবজির দামই বাড়তি। ৮০ টাকার ওপরে বেশিরভাগ সবজি। অনেকের ফসল নষ্ট হয়েছে। সে জন্য দামটা বেশি। এদিকে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সাদা ও লাল ডিমের দাম ২০ টাকা বাড়ে বেড়েছে। আর হাঁসের ডিমের দাম বেড়েছে ৩০ টাকা। বর্তমানে বাজারে এক ডজন লাল ডিম ১৪০, সাদা ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হাঁসের ডিম এখন ২০ টাকা পিস। আর ডজন ২৪০ টাকা। কাপ্তান বাজারের ডিম বিক্রেতা আক্তার মিয়া বলেন, বৃষ্টিতে অনেকের মুরগী মরে গেছে। ডিমের সরবরাহ কমেছে, চাহিদা বাড়ছে। এ জন্য দাম বেশি। মূলত দাম বাড়িয়েছে পাইকাররা। সে জন্য আমাদেরও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এদিকে, দুই সপ্তাহ আগেও পেঁয়াজের দাম ছিল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। কিন্তু এক সপ্তাহ আগে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। বর্তমানে সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়। অর্থাৎ দুই সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ টাকা। পেঁয়াজ বিক্রেতা মো. মোস্তফা বলেন, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম। বাইরে থেকেও আসে না। সে জন্য দাম বেশি। এবার অনেক দিন দাম কম ছিল। এখন একটু বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, দাম বাড়ার পেছনে এক শ্রেণির মানুষের স্বভাবও দায়ী। বাজারে এখন পেঁয়াজ কম। পেঁয়াজের মূল সিজন এখন না। দাম বাড়ার কারণে পেঁয়াজ কম কম নেবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু দেখেন কত মানুষ আসছে। এরা নিয়ে স্টক করবে। বাজারে আরও ঘাটতি পড়বে। দাম আরও বেড়ে যাবে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নাদিম আহমেদ বলেন, বাজারে সবকিছুর ভয়াবহ দাম। কোনটা রেখে কোনটা নেবো। পেঁপে ছাড়া আর কোনটার দামই ৬০ টাকার নিচে নেই। দীর্ঘ দিন ধরে সবকিছুর দাম বেশি। কিন্তু কেউই সেটা দেখছে না। তিনি বলেন, সবজি কিনতেই যদি সব টাকা শেষ হয়, মাছ-মাংস কী দিয়ে কিনবো? বৃষ্টির কারণে এতো দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না। তদারকির কেউ নেই। তারা দুই টাকার জিনিস পাঁচ টাকা রাখলে কে দেখবে? কে ধরবে? এদিকে, লেয়ার ও পাকিস্তানি বা সোনালি মুরগীর দাম ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। লেয়ার মুরগীর দাম বেড়েছে ১০ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি লেয়ার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকায়। পাকিস্তানি মুরগীর দাম ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা। তবে দেশি মুরগী ও ব্রয়লার আগের দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি মুরগীর দাম ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। গত সপ্তাহের মতো প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের রুই মাছের দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। দুই থেকে আড়াই কেজির দাম ২০ থেকে ৩০ টাকা বেড়েছে। বর্তমান দাম ৪৮০ টাকা। দেড় থেকে দুই কেজির দাম ৩৯০ থেকে ৪০০ টাকা, এক থেকে দেড় কেজির দাম ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকা, এক কেজির কমগুলোর দাম ৩০০ টাকা। এছাড়া পোয়া মাছ ৬০০, মৃগেল ২০ টাকা বেড়ে ৩০০, তেলাপিয়া আড়াইশ, পাঙ্গাস ১৮০, দেড় কেজির বেশি পাঙ্গাস ২৫০, শিং সাড়ে পাঁচশ’ থেকে ৬০০, চিংড়ি ৯০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক কেজির কিছু কম ইলিশের দাম ২ হাজার থেকে ২২০০ টাকা, এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকায়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

সবজির দাম চড়া বেড়েছে ডিম পেঁয়াজের দামও
- আপলোড সময় : ০৯-০৮-২০২৫ ০২:০০:০৪ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৯-০৮-২০২৫ ০২:০০:০৪ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ